১৫ শতাংশ নগদসহ সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণার বিধান রেখে ব্যাংকের বার্ষিক লভ্যাংশ (ডিভিডেন্ট) ঘোষণার নতুন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) এ নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপরভিশন থেকে জারি করা সার্কুলারে বলা হয়, করোনা পরিস্থিতিতে আর্থিক সক্ষমতা এবং ব্যাংকের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের রিটার্নের বিষয়টি সামগ্রিকভাবে বিবেচনা করে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত বছরের জন্য ব্যাংকের শেয়ারের বিপরীতে ডিভিডেন্ড দেয়ার ক্ষেত্রে নতুন নীতিমালা অনুসরণ হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত ২০১৯ সালেও এমন নির্দেশনা দিয়েছিল। তবে এবারের নতুন নির্দেশনায় বেশকিছু বিষয়ে সংযোজন-বিয়োজন করা হয়েছে।
লভ্যাংশ ঘোষণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনাগুলো হলো-
ক (১) ঋণের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক হতে ২০২০ সালে মূলধন সংরক্ষণে কোনো সুবিধা না নিয়ে যেসব ব্যাংক আড়াই শতাংশ আপতকালীন সুরক্ষা সঞ্চয়সহ (কনজারেবশন বাফার) কমপক্ষে ১৫ শতাংশ বা তারও বেশি মূলধন সংরক্ষণ করেছে, ওই সব ব্যাংক তাদের সামর্থ্য অনুসারে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ নগদসহ ৩০ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারবে।
(২) প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক হতে ইতোপূর্বে ডিফারেল সুবিধার অধীনে নয় বা বিবেচ্য পঞ্জিকাবর্ষে এরূপ কোনো ধরনের ডিফারেল সুবিধা গ্রহণ ব্যতিরেকে যেসব ব্যাংক ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ২.৫ শতাংশ ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ন্যূনতম ১৩.৫ শতাংশ হতে অনূর্ধ্ব ১৫ শতাংশ মূলধন সংরক্ষণ করতে সক্ষম হবে, সেসব ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে তাদের সামর্থ্য অনুসারে সর্বোচ্চ ১২.৫ শতাংশ নগদসহ মোট ২৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারবে।
(৩) প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক হতে ইতোপূর্বে গৃহীত ডিফারেল সুবিধার অধীনে নয় বা বিবেচ্য পঞ্জিকাবর্ষে এরূপ কোনো ধরনের ডিফারেল সুবিধা গ্রহণ ব্যতিরেকে যেসব ব্যাংক ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ন্যূনতম ১১.৮৭৫ শতাংশ মূলধন সংরক্ষণ করতে সক্ষম হবে, সেসব ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে, তাদের সামর্থ্য অনুসারে সর্বোচ্চ ৭.৫ শতাংশ নগদসহ মোট ১৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারবে। এরূপ যেসব ব্যাংকের মূলধন সংরক্ষণের পরিমাণ ১১.৮৭৫ শতাংশের কম হবে সেসব ব্যাংকের ডিভিডেন্ড ঘোষণার ক্ষেত্রে অনুচ্ছেদ খ (৩) এ উল্লিখিত পরিমাণ অনুসৃত হবে।
খ (১) প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক হতে বিবেচ্য পঞ্জিকাবষের্র জন্য গৃহীত বা ইতোপূর্বে গৃহীত ডিফারেল সুবিধা বাদে ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে যেসব ব্যাংকের মূলধন ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ন্যূনতম ১২.৫ শতাংশ বা তার বেশি হয় সেসব ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে, সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ নগদসহ মোট ১২ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারবে।
(২) প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক হতে বিবেচ্য পঞ্জিকাবষের্র জন্য গৃহীত বা ইতোপূর্বে গৃহীত ডিফারেল সুবিধা বাদে ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে যেসব ব্যাংকের মূলধন ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ন্যূনতম ১১.৮৭৫ শতাংশ হতে অনূর্ধ্ব ১২.৫% হয়, সেসব ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ নগদসহ মোট ১০ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারবে।
(৩) প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক হতে বিবেচ্য পঞ্জিকাবষের্র জন্য গৃহীত বা ইতোপূর্বে গৃহীত ডিফারেল সুবিধা বাদে ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে সেসব ব্যাংকের ন্যূনতম মূলধন ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ অন্যূন ১০.৬২৫ শতাংশ হতে অনূর্ধ্ব ১১.৮৭৫ শতাংশ হয়, সেসব ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারবে।
ব্যাংক কোম্পাসি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশ জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে সমাপ্ত বছরের জন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণার ক্ষেত্র হতে সব তফসিলি ব্যাংকের জন্য প্রযোজ্য হবে।